লিচুর বাগানেই মধু চাষ

 

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ৫নং বালিয়া ইউনিয়নে সিরাজগঞ্জ ও বগুড়া থেকে আগত ১৪ জন জৈনিক ব্যাক্তি আলাদা ভাবে লিচুর বাগানে করছে মধু চাষ! উপার্জনের নয়া দিগন্ত খুলে গেল ঠাকুরগাঁও সদরের ৫ নং বালিয়া ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষকদের সামনে।

 লাভবান মৌমাছি পালক অর্থাৎ মধু চাষিরাও। ভিন্ন জেলা থেকে আগত মৌমাছি পালকদের উৎসাহ দিতে স্থানীয় চাষিদেরও পরামর্শ দিচ্ছে কৃষিঅধিদপ্তর।

আজিজ নামে এক ব্যাক্তি জানান, অগ্রহায়ণে ধান কাটার পরই জেলাজুড়ে ব্যাপক হারে মধু চাষ করেন স্থানীয় কৃষকরা। 

কিন্তু এইবারে স্থানীয়দের চোখে ধরা পড়লো ভিন্ন রুপ।স্থানীয়রা জানান,এপ্রিল মাসের ১৮ তারিখে তারা এই ইউনিয়নে প্রবেশ করে ৩টি স্থানে তারা মধু চাষের জন্য নির্বচন করেন।তার মধ্যে একটি জায়গা হলো সদর উপজেলার ৫ নং বালিয়া ইউনিয়নের (১-২)নং ওয়ার্ডের একটি লিচুর বাগানে।

স্থানীয়দের মধ্যে ফরহাদ নামের এক কলেজ ছাত্র জানান,ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের ছোট বালিয়া,বড় বালিয়া সহ বেশ কয়েকটি বিস্তীর্ণ এলাকায় তাবু খাটিয়ে দু’মাস ধরে মধু সংগ্রহ করবেন তারা। মধু সংগ্রহ করতে বাগানের পাশে রেখে দেন বাক্স। এই বাক্সেই থাকে তাঁদের পালনকারী একটি স্ত্রী ও পুরুষ এবং অসংখ্য শ্রমিক মৌমাছি। 

সকালে খুলে দেওয়া সেই বাক্সের মৌমাছি ছড়িয়ে যায় লিচুর বাগান সহ আশে পাশের খেতগুলিতে।ক্ষেতগুলি থেকে মধু সংগ্রহ করে ঘর অর্থাৎ বাক্সে ফেরে মৌমাছিরা। বাক্সের মধ্যে চাক বানিয়ে সেখানে মধু সঞ্চয় করে। সেই চাক থেকে মধু সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করেন মৌমাছি পালকরা। এদিকে ভিন্ন জেলা থেকে আসা মধু চাষিদের জন্য উপকৃত হচ্ছে জেলার স্থানীয় চাষিরা। 

কেননা, মধু সংগ্রহ করতে আসা ব্যাক্তিদের কাছ থেকে তারা মধু সংগ্রহ পদ্ধতি তারা অতি সহজেই জানতে পারতেছে।

 ফলে তারা ক্ষেতের পাশাপাশি মধু উৎপাদন করতে সক্ষম হবেন।মধু উৎপাদনের যে অনীহা তা এই কৃষকদের মাঝে দেখা যাবেনা।

এপ্রসঙ্গে পেশায় কৃষক আব্দুর রহিম জানান,“শীতের শুরুতেই কয়েক বছর ধরে এজেলায় আসছে মৌমাছি পালক বা মধু চাষিরা। তবে প্রথমদিকে এনিয়ে কোনও স্বচ্ছ ধারণা ছিল না আমাদের। পরবর্তীতে আমরা লক্ষ্য করি ক্ষেত চাষের পাশাপাশি অতি সহজে মধু চাষ করতে যায়।

 মধু সংগ্রহকারী এক ব্যাক্তি বলেন, “বাক্স ভরতি মৌমাছি নিয়ে সারা বছর বিভিন্ন ফুলের মধু সংগ্রহ করি। এটাই আমাদের জীবিকা। কখনও বারুইপুরে লিচু ফুলের মধু। আবার কখনও সুন্দরবনের কেওড়া, গেও, গড়ান ফুলের মধু সংগ্রহ করি। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একটা সময় বাঁকুড়া জেলায় ইউক্যালিপটাস ফুলের মধু সংগ্রহ করতাম। 

বর্তমানে বাঁকুড়া জেলাতে ইউক্যালিপটাস গাছ কমছে কেটে ফেলার কারণে। এরপর থেকেই আমরা এই জেলার লিচুর বাগানে মধু সংগ্রহ করতে আসা শুরু করি। লিচুর বাগানে “মধু সংগ্রহ করার আদর্শ পরিবেশ রয়েছে এই জেলাতে।”